True caller অ্যাপটির মাধ্যমে আমরা অপরিচিত কোন নাম্বারের মালিকের নাম জানতে পারি। অপরিচিত কেউ যদি ফোন করে তবে তার তাৎক্ষণিক পরিচয় জানার জন্য আমরা True caller কে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু দাড়ান, আপনি যদি এই অ্যাপটি আপনার ফোনে ইন্সটল করে রাখেন; আপনি কার সঙ্গে কথা বলেন, কার সঙ্গে চ্যাট করেন ইত্যাদি সমস্ত তথ্য এই অ্যাপটি আপনার ফোন থেকে নিয়ে চলে যাচ্ছে। তবে কীভাবে এই অ্যাপটি এ সমস্ত কাজ গুলো করে এবং কোন কোন তথ্যগুলো আমাদের কাছ থেকে এই অ্যাপটি নিয়ে যাচ্ছে এটি জানার জন্য অবশ্যই টিউনটি শেষ পর্যন্ত দেখবেন।ট্রু কলার অ্যাপ সম্পর্কে আপনি এই টিউনে বিস্তারিত জানতে পারবেন। ট্রুকলার যে আমাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে যাচ্ছে এটি কিভাবে, সেটি জানার জন্য আমাদেরকে প্রথমে জানতে হবে True caller অ্যাপ টি কিভাবে কাজ করে। আর তাহলেই আমরা জানতে পারব যে ট্রু কলার কিভাবে আমাদের থেকে তথ্য নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রথমেই আলোচনা করা যাক True caller কিভাবে কাজ করে এ সম্পর্কে।
ট্রু_কলার_কিভাবে_কাজ_করে?যেখানে আপনার তথ্যগুলো ব্যবহার করে আপনাকেই পরবর্তীতে কোন ব্যবহারকারীর নাম দেখাবে। তবে এখানে আপনাকে সেই নামটি দেখানোর ক্ষেত্রে True caller মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করলো। যেখানে পূর্বে আপনার পরিবারের সেই ব্যক্তির নাম্বারটি অন্য কারো একজনের কাছ থেকে ট্রুকলার নিয়েছে এবং সেটি তার সার্ভারে রেখে দিয়েছিল। এবার আপনি True caller অ্যাপ ব্যবহারকারী হওয়ায় এবং আপনার ফোনের সেই নাম্বারটি সেভ না থাকার কারণে ট্রুকলার আপনাকে সেই নাম্বারের মালিকের নামটি আপনার মোবাইলে এনে দিয়েছে। তবে হ্যাঁ, কোন অপরিচিত নাম্বার থেকে যদি আপনার ফোনে কল আসে এবং সেই মুহুর্তে আপনার ফোনে যদি True caller অ্যাপটি থাকে, তবে অবশ্যই আপনাকে ট্রুকলার এই নাম্বারের মালিকের নাম সহ প্রদর্শন করবে। তবে এজন্য অবশ্যই সে সময়ে আপনার মোবাইলের ইন্টারনেট কানেকশন চালু থাকতে হবে।
কোন একটি নাম্বার থেকে আপনার ফোনে যদি কল আসে এবং আপনার ফোনে যদি সে নাম্বারটি সেভ করা না থাকে, তবে True caller তাৎক্ষণিক সেই নাম্বারটি কে তার সার্ভারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখে। সেই নাম্বারটির সঙ্গে মিল রেখে যদি কোন একটি নাম পায়, তবে তাৎক্ষণিক সেটি সেই ব্যবহারকারীর মোবাইল স্ক্রিনে ভেসে ওঠে। আর এই কাজটি করার জন্য অবশ্যই মোবাইলে ইন্টারনেট কানেকশন চালু থাকা দরকার। তবে একবার যদি কোন একটি নাম্বারের মালিকের নাম খুঁজে পাওয়া যায় তবে পরবর্তীতে সেই নাম্বারটা মোবাইলে সেভ না করলেও পরবর্তীতে সেই নাম্বার থেকে কল আসলে সেই নাম সহ মোবাইলের স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। এক্ষেত্রে ট্রুকলার তার স্টোরেজ ফাইলে সেই নাম্বারটির মালিকের নাম সংরক্ষণ করে রাখে এবং যা পরবর্তীতে কাজে লাগায়।
ট্রুকলার এর সেবা দেওয়ার পদ্ধতির ব্যাপারটি বোঝা খুবই সহজ। এবার মনে করুন, আপনি আপনার গ্রামে যাবেন এবং সেখানকার সমস্ত মানুষের মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে খাতায় লিখে নিবেন। সেই গ্রামে কে কে থাকে এবং তাদের নাম্বার এর পেছনে নামগুলো আপনি আপনার কাছে সংগ্রহ করে রাখলেন এবং তাদেরকে বলে আসলেন আপনাদের যদি গ্রামের কারো নাম্বার এর দরকার পড়ে তবে আমার কাছ থেকে সংগ্রহ করে নিবেন। ঠিক এইভাবে কাজ করে ট্রু কলার অ্যাপ। অতএব আপনি এবার বুঝতে পারছেন যে এই অ্যাপটি আমাদের প্রাইভেসির ওপর কতটা প্রভাব ফেলে।
তবে আপনাকে এখানে আরো একটি কথা বলে রাখি। ট্রুকলার যখন আপনার থেকে কারো নাম্বার এবং নাম সংগ্রহ করে, তখন সেই নামটিই অন্য ট্রুকলার ব্যবহারকারীকে দেখায়। এক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার মোবাইলে কোন সাংকেতিক চিহ্ন দিয়ে কোন একজন ব্যক্তির নাম্বার সংরক্ষণ করে রাখেন, তবে সেই নাম্বারটি ট্রুকলার নেবার পর সেভাবেই অন্য একজন ট্রুকলার ব্যবহারকারীকে দেখাবে। যদি একাধিক ব্যক্তি সেই নাম্বারটি সংরক্ষণ করে রাখে এবং তারা সবাই যদি ট্রুকলার ব্যবহারকারী হয়, তবে এক্ষেত্রে ট্রু কলার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্ট কে ব্যবহার করে সেই নাম্বার এর জন্য একটি সঠিক বা কাছাকাছি নাম দাঁড় করাবে। যা পরবর্তীতে কোনো ব্যবহারকারীকে দেখানোর কাজে ব্যবহার করে।
ট্রু_কলার_আমাদের_কাছ_থেকে_কি_কি_তথ্য নিয়ে_থাকে?
ট্রুকলার ব্যবহার করলে এই ক্ষেত্রে আপনাকে তাদের কাছে শেয়ার করতে হবে আপনার লোকেশন, আইপি অ্যাড্রেস, ডিভাইস আইডি, ডিভাইস ম্যানুফ্যাকচারার বা ফোনের নির্মাতা, ডিভাইস এবং হার্ডওয়্যার সেটিংস, সিম কার্ডর তথ্য, আপনার ডিভাইসে ইনস্টল করা অ্যাপ্লিকেশন। আপনার ফোনে কি কি অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে সেটিও তাদেরকে জানতে হবে। বিজ্ঞাপণের জন্য আইডি; বিজ্ঞাপণ ডেটা, আপনার মোবাইলের অপারেটিং সিস্টেম, ওয়েব ব্রাউজার, আপনি কোন অপারেটরের সিম ব্যবহার করেন, আইএমএসআই; আপনার মোবাইলের পর্দা রেজল্যুশন; ডিভাইস টি ব্যবহারের পরিসংখ্যান; ডিফল্ট যোগাযোগ অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে ডিভাইসের কন্ট্রাক লিস্ট অ্যাক্সেস; ডিভাইস লগ এবং ইভেন্ট তথ্য; আপনার ডিভাইসের আগত এবং বহির্গামী কল এবং বার্তাগুলির লগস, কীওয়ার্ড এবং মেটা ডেটা। এবার আপনি যখন আপনার মোবাইলে True caller অ্যাপ ইন্সটল করেন তখন আপনি বুঝতে পারেন না যে, আপনি তাদের প্রাইভেসি পরিস্থিতে অজান্তেই টিক মার্ক দিয়ে আপনার আপনার সকল তথ্য তাদের কাছে তুলে দিচ্ছেন।
সব মানুষের ডেটা একত্রে সংগ্রহ করা এবং সেগুলো থেকে সাধারণ মানুষকে সেবা দেওয়ার বিষয়টিকে বলা হয় Crowd sourcing। এর মানে, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ডেটা নিয়ে সাধারণ মানুষকেই সার্ভিস দেওয়া। এবার অনেকে বলতে পারে এই অ্যাপটি তো তবে আমাদের জন্য উপকার ই করে। যেখানে এই অ্যাপটির মাধ্যমে আমরা কোন অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে ফোন আসলে তার নাম জানতে পারি। কোন নাম্বারটি স্প্যাম সেটিও আমরা এই অ্যাপটির মাধ্যমে জেনে নিতে পারি। আপনি হয়তোবা ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করেছেন যে, এই অ্যাপটি ইনস্টল করার জন্য আপনাকে কোন কোন বিষয়গুলোর অনুমতি দিতে হয়। আপনি যখন তাদের প্রাইভেসি পলিসি তে Agree করেন, তখন তারা কিন্তু এটিও বলে দেয় যদি আপনি এসব শর্ত না মানতে পারেন তবে অ্যাপটি আনইন্সটল করে দিতে পারেন। আর আপনি যদি ইনস্টল করে আপনি ব্যবহার করেন তবে আমাদের এসব শর্তগুলো মানতে হবে। এই কারণে আপনি যদি আপনার ফোনের প্রাইভেসিকে গুরুত্ব দিতে চান, তবে এসব কিছুকে আবার আপনাকে ভেবে নেওয়া উচিত। আসলে আপনি নিজেও বুঝতে পারবেন না যে এই অ্যাপটি আপনার কাছ থেকে কোন কোন ডেটা গুলোকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে।
তবে এবার প্রশ্ন হল যে, আমরা কি তবে জানতে পারবো না যে কোন অপরিচিত নাম্বার থেকে কে আমাকে ফোন করছে এবং তার নাম কি? এক্ষেত্রে বলব নিশ্চয়ই; আর সেটি আমরা করতে পারবো True caller কে ব্যবহার করেই। আর এর জন্য আপনাকে আপনার ফোনের নিরাপত্তাকে বাদ দিতে হবে না। আপনি একেবারে নিশ্চিন্তে ট্রু কলার অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন এবং অপরিচিত কোন নাম্বার থেকে আপনাকে ফোন করা হচ্ছে সেটিও জানতে পারবেন। এবার আপনাদের প্রশ্ন হতে পারে তবে এটি আমি কিভাবে করব? তবে সমস্যা নাই এই ব্যাপারটিও আমি নিচে বলছি।
ট্রু_কলার_অ্যাপ_ব্যবহার_না_করেও_কিভাবে অপরিচিত_নাম্বার_দেখবেন?
এর জন্য আপনি নতুন একটি ইমেইল একাউন্ট তৈরী করে নিবেন; যে ইমেইল আইডিতে আপনার কোনো ব্যক্তিগত তথ্য থাকবে না। বলতে গেলে, একেবারে নতুন ফ্রেস জিমেইল আইডি। এবার True caller এর যে ওয়েবসাইট রয়েছে, এখানে আমি অ্যাপের কথা বলছি না। সেখানে ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি আপনার মেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে Sign up করে নিবেন এবং তারপর আপনি ওয়েবসাইটে গিয়ে কোন একটি অপরিচিত নাম্বার লিখে সার্চ করে দেখতে পারেন সেটি কার নাম্বার। যেখানে এটি একটি খুবই অসাধারণ প্রক্রিয়া কোন অপরিচিত নাম্বারের মালিকের পরিচয় দেখার জন্য।
এজন্য আপনাকে কোন অ্যাপ ইন্সটল করতে হবে না। এজন্য আপনি ট্রুকলার এর ওয়েবসাইট কে ব্যবহার করতে পারেন কোন নাম্বার খোঁজার জন্য। যেখানে আপনি ট্রু কলার অ্যাপ ব্যবহার না করেও ট্রুকলার এর ওয়েবসাইট থেকে সকল ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার বেঁচে যাবে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য। যেখানে আপনি ট্রু কলার অ্যাপ টি মোবাইলে ইন্সটল করলে প্রত্যেকটি বিষয়ে আপনাকে পারমিশন নিতে হতো এবং অ্যাপে অনেক কিছুর পারমিশন না দিলে হয়তোবা আপনি অ্যাপটি ব্যবহারে করতে পারতেন না। যেখানে আপনি True caller ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করার মাধ্যমে এসব ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
আপনার কাছে যদি মনে হয়, আমি আমার মোবাইলের বা আমার ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে কি আর করব। তবে আপনার এই সব চিন্তা থেকে আপনি শুরু করার অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন। ট্রু কলার অ্যাপ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র আপনি যে আপনার কন্টাক্ট লিস্ট এর নাম্বার গুলো তাদেরকে দিয়ে দিচ্ছেন, ব্যাপারটা তা নয়। বরং, এমনও হতে পারে, আপনার বন্ধুর ট্রু কলার অ্যাপ ব্যবহার করছে এবং সে আপনার নাম্বারটি অজান্তেই True caller এর সার্ভারে আপলোড করে দিয়েছে। এবার অন্য কোন ট্রু কলার অ্যাপ ব্যবহারকারী যদি আপনার নাম্বারটি লিখে ট্রু কলার এ সার্চ করে তবে এক্ষেত্রে তারা আপনার নামটি দেখাবে।
কিন্তু আপনি মোটেও চান না যে, কোন একজন অপরিচিত ব্যক্তি আপনার নাম্বার দিয়ে আপনার নামটি জানুক। এই সমস্যাটি থেকে মুক্তির জন্য ট্রুকলার একটি ব্যবস্থা রেখেছে। আপনি ট্রু কলার অ্যাপ ব্যবহার করার কোনো একটি পর্যায়ে চাইলে আপনার নাম্বারটি ট্রুকলার এর সার্ভার থেকে মুছে দেবার জন্য রিকোয়েস্ট পাঠাতে পারেন। এছাড়া আপনি যেকোনো সময় ট্রুকলার থেকে আপনার একাউন্ট Deactive ও করে নিতে পারবেন।